ঢাকা,বুধবার, ২০ নভেম্বর ২০২৪

দীর্ঘ মানব জিন্নাতের দীর্ঘ হাত সাহায্যের আশায় বাড়িয়েছে ঢাকায়!

জে.জাহেদ, বিশেষ প্রতিনিধি :: গতকাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতেই দেখা গেলো একজন মানুষকে ঘিরে দাঁড়িয়ে আছে কিছু মানুষ। যে মানুষটি সবার মধ্যমনি হয়ে দাঁড়িয়ে আছেন তিনি যেন রূপকথা থেকে উঠে আসা সেই গালিবার, যে দীর্ঘ এক মানব আর তাকে ঘিরেধরা মানুষগুলো সব লিলিপুট। তার তুলনায় আকৃতিতে অনেক ছোট।

বলছিলাম বিশ্বের অন্যতম দীর্ঘ মানব জিন্নাত আলীর কথা। তার উচ্চতা ৮ ফুট ৬ ইঞ্চি। ইতোমধ্যে দেশের সবচেয়ে লম্বা মানবের খেতাব পেয়েছেন জিন্নাত। এবং বিশ্বে জীবিতদের মধ্যেও তিনি দীর্ঘতম মানব বলে দাবি করা হচ্ছে। তাই তাকে দেখতে ভীড় করেছে মানুষ।

শুক্রবার দেখা গেলো এই দীর্ঘ মানুষটি ধীর পায়ে হেঁটে হেঁটে তার দীর্ঘ হাতটি বাড়িয়ে দিয়ে সাহায্য চাইছিলেন মানুষের কাছে। জিন্নাত আলী অসুস্থ। তার চিকিৎসা চলছে বঙ্গবন্ধু শেখ মজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে। তার চিকিৎসার ভার বহন করছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কিন্তু। তারপরও তার থাকা-খাওয়া ও ওষুধের খরচ মেটাতে পারছে না পরিবারের সদস্যরা। তাই দরিদ্র জিন্নাতকে হাত পাততে হচ্ছে মানুষের কাছে।

কক্সবাজারের বাসিন্দা জিন্নাত পারিবারিকভাবেই দরিদ্র। তার বাবা গ্রামে কৃষিকাজ করেন। জিন্নাত আলীর এই অতিরিক্ত উচ্চতার কারণ শারীরিক জটিলতা। জিন্নাত আলীর দরিদ্র পরিবারের পক্ষে তার চিকিৎসা করানো অসম্ভব। তাকে ভরণ পোষণ করাটাও পরিবারের পক্ষে সম্ভব না। দীর্ঘদেহী জিন্নাতের জন্য প্রতি বেলায় প্রচুর খাবারের প্রয়োজন হয়। অন্যদিকে শারীরিক অসুস্থতা আর অতিরিক্ত লম্বা হওয়ার কারণে কোনো কাজ করতে পারেন না জিন্নাত।

এই পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার চিকিৎসা সহায়তার আশ্বাস দেন। স্থানীয় সংসদ সদস্যের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর সাথে দেখা করার পর তার চিকিৎসা সহায়তার দায়িত্ব প্রধানমন্ত্রী গ্রহণ করেন।

বর্তমানে বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার বিনামূল্যে চিকিৎসা চলছে। তবে দৈনন্দিন খরচ আর ওষুধের খরচ মেটাতে গিয়ে মাঝে মাঝেই হাসপাতাল ছেড়ে পথে নামতে হচ্ছে জিন্নাতকে। জিন্নাতের দেখা শোনা করার জন্য এখানে তার সাথে আছেন তার বড় ভাই ইলিয়াস আলী।

ইলিয়াস আলী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী চিকিৎসা সহায়তা অনুদান দিছে জিন্নাতকে। কিন্তু এগুলো আমাদের হাতে পৌঁছায়নি। আমাদের ফ্রি চিকিৎসা হয়ে হাসপাতালে। তবে ওষুধ কিন্তু থাকতে খেতে অনেক টাকা লাগে। তাই সবাই যদি আমাদের একটু সাহায্য করে ভালো হবে।’

জিন্নাত আলীকে নিয়ে বড় ভাই ইলিয়াস বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে হেঁটে হেঁটে সাহায্য চাইছেন। মানুষজন আসছে, ছবি তুলছে সাহায্যও করছে কেউ কেউ। দীর্ঘ হতে হতে জিন্নাত দারিদ্রতার ভারে ছোট হয়ে যাচ্ছে যেন প্রতিদিন।

পাঠকের মতামত: